কোন কোন সবজি খেলে দ্রুত ওজন কমে?
ওজন কমানোর অনেকগুলো ধাপ রয়েছে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে সহজ ধাপ হচ্ছে সবজি। বিভিন্ন ধরনের সবজি খেলে দ্রুত ওজন কমে। ওজন কমানোর চেষ্টা করলে আগে জানতে হবে যে কোন কোন খাবার শরীরের জন্য জরুরী। অনেকেই ওজন কমানোর ভয়ে ভালো ভালো শাকসবজি খাওয়া বন্ধ করে দেয়। কিন্তু বিভিন্ন শাক-সবজি দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে।
যে সকল সবজি খেলে দ্রুত ওজন কমে সেগুলো যেন আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরী। আমাদের এমন কিছু খাওয়া চলবে না যেগুলো খেলে ওজন বৃদ্ধি করে। আমাদের শরীরের সঠিক পুষ্টি পৌঁছানোটা অত্যন্ত জরুরী।
ভূমিকা
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যে সকল সবজি খেলে দ্রুত ওজন কমে সেগুলো যেন অত্যন্ত জরুরী। অতিরিক্ত ওজন মানুষের সকল কর্মকান্ডে বাধা সৃষ্টি করে, অতিরিক্ত ওজন মানুষের জন্য একটি অভিশাপ। আমার আর্টিকেলটিতে সবজি খেলে কিভাবে ওজন কমে, আবার কোন সবজি খেলে ওজন বাড়ে, 15 দিনে কতটুকু ওজন কমানোর সম্ভব, ওজন কমানোর জন্য কি কি খাবার খেতে হবে এবং কি কি খাবার বাদ দিতে হব। সে সকল তথ্য দেওয়া আছে । যদি আপনি মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে ওজন কমানোর সঠিক তথ্য সহজ ভাবে পাবেন। আশা করি এয়ার টিকেটটি পড়ে আপনার উপকৃত হবেন।
ওজন কমানোর জন্য সকালে কি খাওয়া উচিত
যারা দ্রুত ওজন কমাতে চান তারা খাবারের একটি সঠিক তালিকা করে নিন।সেই খাদ্য তালিকায় কখন কি খাবার খাবেন সেটার একটি সঠিক নিয়ম তৈরি করুন। সবজি খেলে দ্রুত ওজন কমে এ কথা আমরা সবাই জানি। কিন্তু সবজি ছাড়া আরো যে সকল খাবার খেলে দ্রুত ওজন কমে সেগুলো হলোঃ-
পানি
আমার দেবদেহের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে পানি অত্যন্ত ব গুরুত্বপূর্ণ। পানির অপর নাম জীবনে কি আমরা সবাই জানি। প্রয়োজন অনুযায়ী দৈনিক পানি পান করলে দেহের অতিরিক্ত চর্বি কমে। প্রতিদিন সকাল দুপুর ও রাতে খাবার আগে দুই গ্লাস ঠান্ডা পানি পান করলে দেহের অতিরিক্ত ক্যালরি কমানো সম্ভব।
মধু
প্রতিদিন সকালে হালকা গরম পানিতে দুই চামচ মধু মিশিয়ে পান করলে অতিরিক্ত ওজন কমে, স্কিন সুন্দর থাকে, বয়সের ছাপ দূর হয়। মধুর দ্রুত ওজন কমাতে অত্যন্ত ভালো কাজ করে।
লেবু
প্রতিদিন সকালে হালকা গরম পানির সাথে লেবু মিশিয়ে খেলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমে যায়। লেবু গরম পানি একসাথে পান করলে খুব তাড়াতাড়ি ওজন কমে।
গ্রিন টি
গ্রিন টি ওজন কমাতে খুব সহায়ক ভূমিকা পালন করে। গ্রিন টিতে ক্যাটেচিন (catechin) থাকে যার শরীরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্যাট বার্ণ করে। চর্বি কমাতে সাহায্য করে। গ্রিন টি একদিনে ৭০ ক্যালরি পর্যন্ত ফ্যাট বার্ন করে।
ব্রোকলি
প্রকৃত প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ফাইবার এবং ভিটামিন ও মিনারেলস রয়েছে। ব্রকলি তে অনেক কম ক্যালোরি থাকা এটি দেহের ওজন দ্রুত কমাতে সাহায্য করে।
অলিভ অয়েল
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যোগ করলে চর্বি কমে। অলিভ অয়েল শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এতে মনস্যাচুরেটেড ফ্যাট (monounsaturated fat) রয়েছে যা ক্যালরি মান করতে সাহায্য করে।
মাশরুম
প্রতিদিন নিয়মিত মাশরুম খেলে দ্রুত ওজন কমানোর সম্ভব। মাশরুম আপনার অতিরিক্ত চর্বি কাটিয়ে দিতে পারে। গরু বা অন্যান্য চর্বিযুক্ত মাংসের পরিবর্তে মাশরুম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে ওজন ঠিক রাখা সম্ভব। মাশরুমে অনেক কম পরিমাণে ক্যালরি থাকে।
পেস্তা বাদাম
প্রতিদিন নিয়ম করে পেস্তা বাদাম খেলে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি হবে না। শরীর সুস্থ স্বাভাবিক থাকব। পেস্তা বাদাম দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে ।
কোন কোন সবজি খেলে ওজন কমে
ওজন কমাতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কার্যকরী উপাদান হচ্ছে সবজি। সবজিতে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন রয়েছে যা আমাদের সকল ধরনের চাহিদা পূরণ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তবে সব সবজি খেলে ওজন কমে তেমনটা না। কিছু কিছু সবজি খেলে ওজন বাড়ে আবার কিছু কিছু সবজি খেলে ওজন কমে। যে সকল সবজি খেলে দ্রুত ওজন কমে তাহলোঃ-
পালং-শাক
সবুজ রঙের শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ থাকে। পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন,পটাশিয়াম এবং ফাইবার রয়েছে। যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
টমেটো
টমেটো আমরা নানা কাজে ব্যবহার করে থাকি। টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট লাইকোপিন রয়েছে। যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলো আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে অনেকটা সাহায্য করে। মিষ্টি আলু পুরিয়ে লবণ দিয়ে খেলে ওজন কমে। মিষ্টি আলুতে প্রচুর ফাইবার ও কমপ্লেক্স কার্ব কাছে যাও নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।
ব্রকোলি
ব্রকলি দেখতে এবং এর স্বাদ প্রায় ফুলকপির মতোই। ব্রকলিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে ও আয়রন রয়েছে যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
ক্যাপসিকাম
ক্যাপসিকামে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। ক্যাপসিকামে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, বি৬, ফাইবার এবং ফোলেন্ড। এছাড়া এটা প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে যা ওজন নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে।
মাশরুম
মাশরুমের রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং চর্বি কমাতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন এর খাদ্য তালিকায় মাশরুম খাওয়ার অভ্যাস করুন।
গাজর
গাজর খুব কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার। তাই প্রতিদিন গাজরের জুস, সালাদ কিংবা তরকারিতে দিয়ে সাহায্য করে খেলে ওজন বাড়ে না।
শসা
শসায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও পানি। যা খুদা লাগার প্রমতা কমায়। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শসা রাখতে পারেন।
কচু খেলে কি ওজন বেড়ে যায়
কচু মানুষের কাছে অনেক জনপ্রিয় একটি সবজি। কচুর প্রায় সব অংশই খাওয়া যায়। তবে আমরা জানি যে মাটির নিচে যে কোন সবজি খেলে ওজন বাড়ে। কিন্তু কচুতে ওজন বাড়ায় না। কচুতে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ রয়েছে যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া কচুর অনেকগুলো উপকারী দিক রয়েছে। যেমনঃ-
- কচু চোখের জন্য উপকারী
- কচু খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে
- ওজন কমাতে সাহায্য করে
- কচু ত্বকের জন্য উপকারী
- কচু চুলের জন্য উপকারী
- কচু রক্তচাপ নিয়ন্ত্র রাখে
ওজন কমাতে যে খাবার বাদ দিতে হবে
চর্বিযুক্ত খাবার দেহের ওজন তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি করে। তাই ওজন কমাতে হলে সবার আগে চর্বিযুক্ত খাবার বাদ দিতে হবে। এছাড়াও আরো অনেক খাবার আছে যেগুলো খেলে ওজন বাড়ে। যেমন আলু, ঘি, চিনি এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার, বিভিন্ন তেলে ভাজা খাবার এবং মাটির নিচের জন্মানো সবজি। ১৫ দিনে কত কেজি ওজন কমানো সম্ভব। আমরা সবাই জানি সবজি খেলে দ্রুত ওজন কমে। কিছু নিয়ম অনুসরণ করলে ১৫ দিনে ৫ থেকে ৭ কেজি ওজন কমানো সম্ভব। যদি ১৫ দিনে ওজন কমাতে চান তাহলে কিছু ডায়েট চার্ট বানিয়ে নিতে হবে এবং সে অনুযায়ী নিয়মিত সেটা অনুসরণ করতে হবে। যেমনঃ-
- প্রতিদিন ভোরবেলা হাঁটা।
- আটটার মধ্যে নাস্তা করা।
- সকাল ১১ঃ০০ টার মধ্যে হালকা খাবার।
- দুপুর একটার মধ্যে একটা দুপুরের খাবার।
- বিকেলে হালকা নাস্তা করা।
- রাত ৪টার মধ্যে রাত্রের খাবার।
লেখকের মন্তব্য
ওজন জন্য কতটা অভিশাপ তা একজন স্বাস্থ্যবান ব্যক্তি শুধু জানেন। অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য আমাদের অনেকগুলো পথ অনুসরণ করতে হয়। সবজি খেলে দ্রুত ওজন কমে। এছাড়া আর কিছু কিছু পথ অনুসরণ করলে আমাদের শরীর সুস্থ থাকবে এবং ওজন ও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আশা করি আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা উপকৃত হবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url